ঢাকা, ০৩ মে শুক্রবার, ২০২৪ || ২০ বৈশাখ ১৪৩১
good-food
৫৬৮

বিশ্বে লাইব্রেরি পোড়ানো বা লুটপাটের ঘটনা 

লাইফ টিভি 24

প্রকাশিত: ১৪:১৬ ৭ ফেব্রুয়ারি ২০২১  

শত্রুপক্ষ যখন কোনও দেশ দখলের নেশায় মত্ত হয়, তখন তাদের অন্যতম কাজ হলও অগ্নিসংযোগ বা লুণ্ঠনের মাধ্যমে লাইব্রেরি ধ্বংস করা। 

তবে কোনও এক পণ্ডিত বলেছেন, ‘কখনো সাংস্কৃতিক শুদ্ধি প্রক্রিয়ার অন্যতম পন্থা হিসেবে উদ্দেশ্য প্রণোদিতভাবে লাইব্রেরি ধ্বংস করা হয়।’

তবে এ কথাও সত্যি যে অতীতে অনেক লাইব্রেরি প্রাকৃতিক বিপর্যয়, যেমন ভূমিকম্প, বন্যা বা আকস্মিক অগ্নিকাণ্ডের কারণে ধ্বংস হয়েছে, যা মানুষের ক্ষমতার জন্য বা ইচ্ছায় হয়নি। 

যা হোক, অনেক ক্ষেত্রে দেখা গেছে সেসব অমূল্য সম্পদের ক্ষতি কখনই পূরণ করা সম্ভব হয়নি এবং হওয়ারও নয়, এমনকি সাংস্কৃতিক ঐতিহ্যেরও পুনরুদ্ধার করা রীতিমতো অসম্ভব। 

লাইব্রেরি লুণ্ঠন এবং জ্বালিয়ে পুড়িয়ে দেয়ার জঘন্যতম প্রক্রিয়া শুধু আধুনিক যুগেই সীমাবদ্ধ নেই, বরং সেই আদিকালেও, অর্থাৎ খ্রিস্টপূর্বাব্দেও এমন অনেক ঘটনা ঘটেছে। 

উদাহরণ হিসেবে বলা যায়, খ্রিস্টপূর্ব ২০৬ অব্দে তৎকালীন চীনা সম্রাটের আদেশে শিয়ানইয়াং প্রাসাদ এবং স্টেট আর্কাইভ অগ্নি সংযোগ করে ধ্বংস করা হয়। 

উল্লেখ্য, সেই স্টেট আর্কাইভে দুষ্প্রাপ্য বইয়ের সংগ্রহ ছিল। এছাড়া ৩৯২ খ্রিস্টাব্দে শত্রুরা মিসরের আলেকজান্দ্রিয়া শহরের মধ্যে অবস্থিত ‘সেরাপিয়াম লাইব্রেরি’ লুণ্ঠন করে এবং পুড়িয়ে দেয়। 

লাইব্রেরি পোড়ানো এবং লুটপাটের আরো অনেক উদাহরণ রয়েছে, যেমন আলেকজান্দ্রিয়া লাইব্রেরি (যদিও মতানৈক্য রয়েছে), ভারতের নালন্দা লাইব্রেরি (১১৯৩), ইরাকের বাগদাদ লাইব্রেরি (১২৫৮) এবং শ্রীলংকার জাফনা পাবলিক লাইব্রেরি (১৯৮১)।

দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধের আগে (১৯৩৩ সালের ১০ মে) জার্মান শাসকগোষ্ঠী দেশজুড়ে বই পোড়ানোর আয়োজন করে।

কাকতালীয়ভাবে হোক বা অন্য কোনও কারণে হোক, শেলডন (২০২০) উল্লেখ করেছেন, তার অনেক আগেই (১৮৮২ সালে) জার্মান ইহুদি কবি হাইনরিশ হাইন লিখেছেন, ‘যেখানে মানুষ বই পোড়াবে, সেখানে তারা শেষ পর্যন্ত মানুষকেও পুড়িয়ে মারবে।’ 

দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধের সময়ও এ ধরনের কর্মকাণ্ড অব্যাহত ছিল। মার্ক গ্লিকম্যানের উদ্ধৃতি দিয়ে শেলডন (২০২০) আরো লিখেছেন, ‘এডলফ হিটলারের ফ্যাসিবাদী শাসনামলে নাসি চোরেরা জার্মানি এবং ইউরোপজুড়ে লক্ষ লক্ষ বই লুট করেছে এবং সেসব লুটপাট ছিল ইতিহাসের বৃহত্তম এবং সবচেয়ে ব্যাপক বই লুটের কর্মকাণ্ড।’ 

শুধু তা-ই নয়, দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধের সময় একদিকে জার্মান এবং অন্যদিকে জাপানি সৈন্যরা ইউরোপের বিভিন্ন দেশে এবং চীনের অসংখ্য লাইব্রেরি ধ্বংস করেছে।